একটু চোখ বুলিয়ে নিন
সারা বিশ্বে আগাথা ক্রিস্টি কেন যে “রহস্য সম্রাঞ্জী” হিসাবে পরিচিতা, সেটা যেমন আজ
কারো কাছে অজানা নয়, আবার সেটা এক রহস্যও বটে! তবে সে রহস্য আর কিছু নয়, তাঁর
লেখার এবং সব শেষে তার সৃষ্ট গোয়েন্দাদের বিশাল জনপ্রিয়তা । প্রথমেই ধরা যাক, সেই বেঁটে,
ছোট-খাটো চেহারার ধুসর কোষের অধিকারি বেলজিয়ান গোয়েন্দা এরকুল পোয়ারোর কথা!
খুনের কোনো কত নেই, অথচ এ হেন কেসে তিনি তার অসাধারণ বুদ্ধি দিয়ে, অবিশ্বাস্য যুক্তি
দিয়ে শেষ পর্যন্ত প্রকৃত খুনীকে ঠিক খুঁজে বার করেছেন। এরকুল পোয়ারোর অসাধারণ বুদ্ধির
ছাপ আমরা দেখতে পাই ক্রিস্টির বিখ্যাত গোয়েন্দা উ পন্যাস “মার্ডার অফ রজার আকরয়েড”-
এ। জাবায় এই গোয়েন্দা রহস্য উপন্যাসটিরই প্রথম নাট্যরূপ দেওয়া হয় “আযালিবাই” নামে
এবং ওয়েস্ট এন্ড-এ সাফল্যের সঙ্গে সেই নাটকটি মঞ্চস্থ হয়েছিল। পোয়ারোর পরেই আগাথার
আর এক বিখ্যাত গোয়েন্দা মিস মার্পলের নাম সবার জানা আছে নিশ্চয়ই । ১৯৭৬ সালে আগাথা
ফিস্টি তার শেষ লেখা “ ল্লিপিং মার্ডারে” মিস মার্পলকে সফল গোয়েন্দা হিসাবে উপস্থাপন
করে তার সুক্ চুলচেবা বিচাবের আর এক নজির স্থাপন করেছিলেন।
এই অমনিবাসে আগাথা ক্রিস্টিব সৃষ্ট সব গোয়েন্দাদেরই স্থান দেওয়া হয়েছে, আর তাই
সব গোয়েন্দাদের এখানে একব্রিত কবতে পারাব জন্য এব নামকরণ সার্থক হয়েছে £ “পোয়ারো
মার্পল এন্ড কোম্পানি!” নামের সঙ্গে সামগ্রস্ম রেখে আগাথা ক্রিস্টির শ্রেষ্ঠ উপন্যাস এবং
গল্পের স্থান করে দেওয়া হয়েছে এখানে। তবে একথা অবশ্ই অনস্বীকার্য যে, তার প্রতিটি
উপন্যাস অনবদ্য, সর্বকালের সেরা বলে বিবেচিত । ইংরেজী ভাষায় তার বই যেমন লক্ষ লক্ষ
বিক্রী হয়েছিল, তেমনি লক্ষ লক্ষ কপি বিক্রী হয় ৪৫টি বিদেশী ভাষায়। সর্বকালের সর্বভাষায়
তিনি এক অপ্রতিহন্নী লেখিকা । বিক্রীর দিক থেকে বাইবেল এবং শেক্জপীয়রের পরেই তার স্থান
হঙ্গা যেতে পারে।
আগাথা ক্রিস্টি জন্মগ্রহন করেছিলেন টুর্কিতে 00995)। ওঁর প্রথম উপন্যাস “দি
মিষ্িয়াস আযফেয়ার আট ট্টাইলস” লেখা হয়েছিল প্রথম বিশ্বযুদ্ধের শেষ ভাগে। তখন তিনি
৬0 হিসাবে কাজ করছিলেন। ১৯২৬ সাল থেকে প্রায় প্রতি বছর একটি করে তার উপন্যাস
প্রকাশিত হয়েছে।
৭৯টি রহস্য-গোয়েন্দা উপন্যাস, বেশ কয়েকটি ছোট বহস্য গল্পের সংকলন, ১৯টি নাটক
লিখেছিলেন তিনি । আবার মেরি ওয়েষ্ট ম্যাকটের ছল্পনামে ছয়টি উপন্যাস লিখেছিলেন তিনি।
তার সেরা উপন্মাসগুলির অন্যতম “আ্যান্ড দেন দেয়ার ওয়াজ নান’ ও “ক্যারিবিয়ান মিষ্টি এই
সংকলনে গ্রথিত হয়েছে। আগাথা ক্রিস্টি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছিলেন ১৯৭১ সালে।
জাগাথা ক্রিস্টি চারটি সামাজিক উপন্যাসও লিখেছিলেন। সেই সঙ্গে একটি
অটোবারোগ্রাফি ঃ “কাম, টেল মি হাউ ইউ লিভ” যাতে তিনি ঠার আর্কিওলজিস্ট স্থায়ী স্যার
মাক ম্যালোয়ানকে সাথী করেছিলেন।
লেখক সম্পর্কে
বিখ্যাত ব্রিটিশ উপন্যাসিক ড্যাম আগাথা মেরি ক্লারিসা
ত্রিস্টি “আগাথা ক্রিস্টি” নামেই সর্বাধিক পরিচিত।
মেরি ওয়েস্টম্যাক্ট ছন্দনামেও লিখেছেন তিনি ।
আগাথা ক্রিস্টির জন্ম ১৫ সেপ্টেম্বর ১৮৯০ খ্রিস্টাব্দে।
রহস্য উপন্যাসের অন্যতম গুরুতৃপূর্ণ ও উদ্ভাবনী
লেখকদের একজন হিসেবে গণ্য করা হয় তাকে । স্যার
আর্থার কোনান ডয়েলের পরেই তার অবস্থান। “দ্য
কুইন অফ ক্রাইম” নামেও তিনি পরিচিত ।
সর্বমোট ৬৬টি রহস্য উপন্যাস লিখেছেন তিনি। এর
পাশাপাশি লিখেছেন ১৪টির মতো ছোটোগল্ল ও
রোম্যান্টিক গল্প । তার উল্লেখযোগ্য রচনাগুলো হলো-
মার্ডার অন দ্য ওরিয়েন্টাল এক্সপ্রেস, মার্ডার ইন
মেসোপটেমিয়া, হিকোরি ডিকোরি ডক, দ্য এবিসি
মার্ডার, আ্যান্ড দেন দেয়ার ওয়্যার নান প্রভৃতি ।
এরকুল পোয়ারো এবং মিস মার্পল তার সৃষ্ট বিখ্যাত
দুটো চরিত্র।
ক্রিস্টির অনেকগুলো রহস্য কাহিনি থেকে নির্মিত হয়েছে
চলচ্চিত্র। গিনেস বুক অফ ওয়ার্ড রেকর্ডস এর
তথ্যানুসারে আগাথা ক্রিস্টি বিশ্বের সর্বকালের সর্বাধিক
বিক্রীত বইয়ের লেখক। তার সমকক্ষে একমাত্র
উইলিয়াম শেকসপিয়ারই অবস্থান করছেন । ইউনেস্কোর
বিবৃতি অনুসারে তিনিই একমাত্র লেখক যার রচনা
সবচেয়ে বেশি সংখ্যক ভাষায় অনুদিত হয়েছে। এ পর্যন্ত
সর্বমোট ৫৬টি ভাষায় অনূদিত হয়েছে তার বই।
১৯৭৬ খ্রিস্টানদের ১২ জানুয়ারি ইংল্যান্ডের
অক্সফোর্ডশায়ারের উইন্টার্ককে ৮৬ বছর বয়সে
মৃত্যুবরণ করেন। পরে তাঁকে সমাহিত করা হয়
অক্সফোর্ডশায়ারের সেন্ট মেরি চার্চে ।