একটু চোখ বুলিয়ে নিন
অতিপ্রাকৃত গলে গলের চেয়ে ভূমিকা বড় হয়ে থাকে!
গাছ যত-না বড়, তার ডালপালা তার চেয়েও বড়। এই গল্পেও তাই হবে।
একটা দীর্ঘ ভূমিকা দিয়ে শুরু করব। পাঠকদের অনুরোধ করছি তাঁরা যেন ভূমিকাটা
পড়েন। এর প্রয়োজন আছে।
বাবা-মা”র একমাত্র ছেলে, দেখতে রাজপুত্র না হলেও বেশ সুপুরুষ। এম” এ
পাস করেছে। বাবার ব্যবসা দেখাশোনা করা এবং গুপ থিয়েটার করা__এই দুইয়ে
বাবা-মা’র একমাত্র ছেলে হলে যা হয়- বিয়ের জন্যে অসংখ্য মেয়ে দেখা হতে
লাগল। কাউকেই পছন্দ হয় না। কেঁটি বেশি লম্বা, কেউ বেশি বেঁটে, কেউ বেশি ফর্সা,
কেউ বেশি কথা বলে, আবার কেউ-কেউঁ দেখা গেল কম কথা বলে। নানান
শেষ পর্যন্ত যাকে পছন্দ হল, সে-মেয়ে ঢাকা ইডেন কলেজে বিএ” পড়ে__
ইতিহাসে অনার্স! মেয়ের বাবা নেই! মা’র অন্য কোথায় বিয়ে হয়েছে। মেয়ে তার
আমার মাম! এবং মামী দু’জনের কেউই এই বিয়ে সহজভাবে নিতে পারলেন না।
যে-মেয়ের বাবা নেই, যা আবার বিয়ে করেছে_ পাত্রী হিসেবে সে তেমন কিছু না। তা ছাড়া সে খুব সুন্দরীও না। মোটামুটি ধরনের চেহারা। আমার মামাতো ভাই তবু কেন জানি একবাক্সমাত্র এই মেয়েকে দেখেই বলে দিয়েছেএই মেয়ে ছাড়া আর কাউকে
সে বিয়ে করবে না। মেয়ের বাবা নেই তো কী হয়েছে? সবার বাবা চিরকাল থাকে
নাকি? মেয়ের মা’র বিয়ে হয়েছে, তাতে অসুবিধাটা কী? অল্প বয়সে বিধবা হয়েছেন,
তার তো বিয়ে করাই উচিত। এমন তো না যে, দেশে বিধবাবিবাহ নিষিদ্ধ!
লেখক সম্পর্কে
জন্ম ১৯৪৮, ১৩ নভেম্বর । ময়মনসিংহ জেলার
কুতুবপুর গ্রামে । “নন্দিত নরকে’-র মাধ্যমে ” ৭২
সালে হুমাঘুন আহমেদ যখন সাহিত্যাঙ্গনে
আত্বপ্রকাশ করলেন- তখনই বোঝা গিয়েছিল
কালস্রোতে এই নবীন লেখক হারিয়ে যাবেন না,
এদেশের সাহিত্যাঙ্গনে হীরের মতোই জ্বলজ্বল
করবেন। হুমায়ুন আহমেদের এই অমিত সম্ভাবনা
তখনই টের পেয়েছিলেন প্রখ্যাত লেখক-সমালোচক
ড. আহমদ শরীফ, তার এক লেখায় তরুণ লেখক
হুমায়ুন আহমেদকে অভিনন্দিত করেছিলেন।
শুধু জনপ্রিয় লেখক নন, নাট্যকার ও চলচ্চিত্রকার
হিসেবেও তিনি সফল । ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের
রসায়নশান্ত্রের অধ্যাপক হিসেবেও ছাত্রছাত্রীদের
কাছে তিনি ছিলেন জনপ্রিয় । হুমায়ুন আহমেদ যেন
গল্পের সেই পরশ পাথর- যখন যেখানে হাত
দিয়েছেন সোনা ফলেছে। শুধু মধ্যবিত্ত জীবনের
কথকতা সহজ সরল গদ্যে তুলে ধরে পাঠককে
মন্তরমুগ্ধ করে রাখার মধ্যেই তাঁর কৃতিত্ব সীমিত নয়,
বেশকিছু সার্থক সায়েন্স ফিকশনের লেখক তিনি;
জনপ্রিয় চরিত্র মিসির আলি ও হিমুর ত্রষ্টা তিনি- যে
চরিব্র দুটি যথাক্রমে লজিক ও এন্টি লজিক নিয়ে
কাজ করে।
হুমায়ুন আহমেদ নির্মিত আগুনের পরশমণি, শ্রাবণ
মেঘের দিন ও দুই দুয়ারী চলচ্চিত্র তিনটি শুধু
জুধীজনের প্রশংসাই পায়নি, মধ্যবিস্ত দর্শকদেরও
হলমুখী করেছে বহুদিন প্র। বিটিভি ও অসংখ্য
প্যাকেজ নাটকের রচয়িতা ও নিমাতা তিনি।
সফল ।
কথাসাহিত্য-নাটক-চলচ্চিত্রে তাৎপর্যপূর্ণ অবদানের
স্বীকৃতি স্বরূপ পেয়েছেন তিনি বনু পুরষ্কার
উল্লেখযোগ্য পুরষ্কারের মধ্যে রয়েছে একুশে পদক,
বাংলা একাডেমী পুরস্কার, শিশু একাডেমী পুরস্কার,
লেখক শিবির পুরস্কার, মাইকেল মধুসূদন পুরস্কার,
স্বর্ণপদক, অতীশ দীপংকর স্বর্ণপদক, জাতীয়
পারফরমেন্স আযওয়ার্ডস, বাচসাস পুরস্কার ইত্যাদি ।