Atlantic er Opare by Abul Asad-25

আটলান্টিকের ওপারে – আবুল আসাদ (Atlantic er Opare by Abul Asad)

একটু চোখ বুলিয়ে নিন

নিকোলাস বুখারিন বুঝল সে বেঁচে আছে। ব্রাশ ফায়ারের গুলী তার লাগেনি।
চোখ খুলল নিকোলাস বুখারিন।
চোখ খুলেই দেখল তার সামনে দাঁড়ানো আইভানের সৈনিক প্রহরীটি ব্রাশ ফায়ারের শব্দ লক্ষ্যে পেছনে তাকিয়েছে।
নিকোলাস বুখারিন একে ঈশ্বরের দেয়া সুযোগ মনে করল। ঝাঁপিয়ে পড়ল সে প্রহরীটির উপর।
কিন্তু ততক্ষণে নিকোলাস বুখারিন মিঃ প্লাতিনির কক্ষের সামনে দ্বিতীয় প্রহরীটির নজরে পড়ে গেছে।
দ্বিতীয় প্রহরীটির তার হ্যান্ড মেশিনগান তুলে গুলি করল নিকোলাস বুখারিনকে লক্ষ্য করে।
একটি গুলি গিয়ে নিকোলাস বুখারিনের পাঁজরকে বিদ্ব করল।
কিন্তু তার দেহ গিয়ে পড়ল প্রথম প্রহরীটির উপর।
গুলি বিদ্ধ হয়েও নিকোলাস বুখারিন প্রহরীটিকে জড়িয়ে ধরল।
কিন্তু তার আগেই প্রথম প্রহরীটির হ্যান্ড মেশিনগান ছিটকে পড়েছিল তার হাত থেকে।
ওদিকে আহমদ মুসা কালো কাপড়ে আবৃত আগন্তুকের ব্রাশ ফায়ার থেমে যাবার সাথে সাথেই উঠে দাঁড়িয়েছে।
পেছন ফিরে উঠে দাঁড়িয়েছিল আহমদ মুসা। কালো কাপড়াবৃত আগন্তুকের দিকে এগুতে যাবে, এমন সময় পেছন থেকে হ্যান্ড মেশিনগান গর্জে উঠার শব্দ পেল। চমকে উঠে পেছনে ফিরল সে।
দেখল, করিডোরের একেবারে পুব মাথায় মাটিতে পড়ে দুজন একে অপরকে কাবু করার চেষ্টা করছে।
একজন সৈনিকের পোশাক। আরেকজনের দিকে চাইতেই চমকে উঠল আহমদ মুসা। নিকোলাস বুখারিনের সাথে তার সৈনিকের লড়াই হচ্ছে কেন?
আহমদ মুসার নজরে পড়ল, নিকোলাস বুকারিন তার বাম হাত দিয়ে নিজের পাঁজর চাপে ধরে আছে এবং ডান হাত দিয়ে গলা চেপে ধরেছে সৈনিকটির। আর সৈনিকটিও দু’হাতে গলা চেপে ধরেছে নিকোলাস বুখারিনের।
রক্তে ভেসে যাচ্ছে নিকোলাস বুখারিনের বাম পাঁজর। আহমদ মুসা বুঝল, ব্রাশ ফায়ারটি নিকোলাসকে লক্ষ্য করেই হয়েছে।
আহমদ মুসা ছুটে গেল সেদিকে। আহমদ মুসাকে দেখতে পেয়েছে নিকোলাস বুখারিন। বলল সে আহমদ মুসার দিকে তাকিয়ে, ‘পারলাম না আমি, পাশের ঘরে ক্যাথারিন ও প্লাতিনি বন্দী। উদ্ধার কর তাদের।’
বলে নিকোলাস বুখারিন সৈনিকটির গলা ছেড়ে দিয়ে দু’হাতে নিজের পাঁজর চেপে ধরল। আহমদ মুসা সৈনিকটির হাত থেকে ছিটকে পড়া করিডোরের এদিকে চলে আসা হ্যান্ড মেশিনগান তুলে নিয়েছে।
সৈনিকটি নিকোলাস বুখারিনকে ছেড়ে দিয়ে উঠে দাঁড়াল। পকেটে হাত দিয়ে সে বের করল রিভলবার।
ঠিক এই সময় মিঃ প্লাতিনির কক্ষের সামনে দাঁড়ানো সেই দ্বিতীয় সৈনিকটি ছুটে এল আহত বুখারিনের পাশে দাঁড়ানো প্রথম সৈনিকের কাছে।
আহমদ মুসা প্রথম সৈনিককে রিভলবার বের করতে দেখেই হাতের হ্যান্ড মেশিনগানের ট্রিগারে আঙুল চাপে তৈরি হয়েছিল। দ্বিতীয় সৈনিকটি ছুটে আসতে দেখেই ট্রিগারে আঙুল চাপল সে।
হ্যান্ড মেশিনগানের ব্যারেল সে ঘুরিয়ে নিল প্রথম ও দ্বিতীয় সৈনিকের উপর দিয়ে।
আহমদ মুসা তার হ্যান্ড মেশিনগান বাগিয়ে প্রবেশ করল ক্যাথারিনদের কক্ষের সামনে দিয়ে যাওয়া করিডোরে।
প্রবেশ করার সময় সে করিডোরের পুব পাশ দিয়ে দাঁড়ানো পাঁচটি কক্ষের দক্ষিণ দিক থেকে দ্বিতীয়টির দরজা বন্ধ হতে দেখল।
‘আহমদ মুসা, গ্রেট বিয়ারের প্রধান শয়তান আইভান ঐখানে লুকিয়েছে। ঐখানে প্রিন্সেস ক্যাথারিন এবং মিঃ প্লাতিনি রয়েছেন। তুমি দেখ, শয়তান ওদের যেন ক্ষতি না করে।’ ক্লান্ত কণ্ঠে বলল নিকোলাস বুখারিন।
আহমদ মুসা এগিয়ে গেল নিকোলাস বুখারিনের কাছে। ঝুঁকে পড়ল তার পাঁজরের আহত স্থানটা পরীক্ষার জন্যে।
নিকোলাস বুখারিন তার একটা হাত দিয়ে ঠেলে আহমদ মুসাকে সরিয়ে দিতে চেষ্টা করে বলল, ‘সময় বেশি পাবে না। তাড়াতাড়ি ওদেরকে শয়তানের হাত থেকে উদ্ধার কর। আমাদের রাশিয়াকে তুমি সাহায্য কর।’
‘কিন্তু আপনি গুরুতর আহত।’
‘আমার কথা বাদ দাও। আমি একজন সৈনিক। লাখো সৈনিক আছে রাশিয়ায়। তুমি যাও।’
আহমদ মুসা এগুলো দরজার দিকে।
পেছন থেকে নিকোলাস বুখারিন বলল, ‘দরজায় ডিজিটাল লক। তুমি এই ম্যাগনেটিক রেডিয়েশনটা নিয়ে যাও।’

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top