Bipode Anatolia by Abul Asad-49

বিপদে আনাতোলিয়া – আবুল আসাদ (Bipode Anatolia by Abul Asad)

একটু চোখ বুলিয়ে নিন

মিসেস গাজেনের বাড়িটা সুন্দর একটা ডুপ্লেক্স। নিচের তলাতে থাকে আয়া ও পরিচারিকা। রান্না-বান্না, ষ্টোর সব নিচ তলাতেই। সব মিলিয়ে নিচ তলায় ৫টি ঘর।
নিচ তলা থেকে সার্চ শুরু করেছিল আহমদ মুসা।
কাজে লাগতে পারে এমন কিছুই পেল না সে নিচ তলায়।
নিচ তলায় সিঁড়ির গোড়ায় বড় একটা লাউঞ্জর মত জায়গা। নিচ তলার কেন্দ্র এটাই। এখান থেকে রান্নাঘর, স্টোর, ড্রয়িং, শোবার ঘর সবই দেখা যায়। এখানে দোল খাওয়া একটা ইজি চেয়ার।
আহমদ মুসা আয়াকে জিজ্ঞেস করল, ‘এ ইজি চেয়ারটা কার?’
সার্চের সময় আয়া ও পরিচারিকাকে আহমদ মুসা সাথেই রেখেছিল।
‘এখানে ম্যাডাম বসতেন। ছুটির দিন কিংবা অফিস থেকে আসার পর বিকেলে এখানে বসতেন। আমরা কাজ তরতাম, আর তিনি বসে বসে দেখতেন এবং গল্প করতেন।’ আহমদ মুসার প্রশ্নের উত্তরে বলল আয়া।
পরিচারিকা ও আয়া দু’জনেই মধ্যম বয়সের। পরিচারিকা গোবেচারা চেহারার, কিন্তু আয়ার চোখ-মুখ খুব শার্প। আর্মেনীয়, না তুর্কি বুঝা মুশকিল। তবে কথায় আর্মেনীয় টানটা একটু খেয়াল করলেই বুঝা যায়।
‘মিসেস গাজেন ছুটি ও অবসর আর কিভাবে কাটাতেন আয়া?’ জিজ্ঞাসা আহমেদ মুসার।
‘লিখে-পড়ে তিনি সময় কাটাতেন,’ বলল আয়া।
‘কি লিখতেন?’ জিজ্ঞাসি আহমদ মুসার।
‘‘দৈনিক ভ্যানের নিকল’-এ নিয়মিত তিনি ছদ্মনামে কলাম লিখতেন।’ আয়া বলল।
‘তাঁর সে কলামের কি কোন কালেকশন আছে?’ বলল আহমদ মুসা।
‘আছে অবশ্যই। তার স্টাডিতে পাওয়া যেতে পারে।’ আয়া বলল।
‘নিচের কাজ শেষ। চলুন উপরটা দেখব।’
বলে আহমদ মুসা ইজি চেয়ার ক্রস করে সিঁড়ির দিকে যাবার সময় ইজি চেয়ারের পেছনের ‘সেফারস প্লেট’ তার নজরে পড়ল। প্রস্তুতকারী প্রতাষ্ঠানের নামটাই তার দৃষ্টি আকর্ষণ করল। টার্কিস হরফে ‘আডিরা ফার্নিচারস’। ‘আডিরা’ হিব্রু শব্দ। অর্থ- ‘শক্ত’, ‘শক্তিশালী’। সেফারস প্লেটে একটা মনোগ্রাম। বহুকোণ বিশিষ্ট তারার মধ্যে আর্টিস্টিক কায়দায় হিব্রু অক্ষরে আডিরা লেখা।
হঠাৎ আহমেদ মুসার কি মনে পড়ল। একটু ঘুরে সামনে গিয়ে ইজি চেয়ারের একটা হাতলের উপর চোখ ফেলল। তার সন্দেহ ঠিক। এগুলোও হিব্রু অক্ষর। এগুলোও হিব্রু অক্ষর। উপর থেকে নিচে একটি করে অক্ষর বেশ স্পেস দিয়ে লেখা হয়েছে। মোট চারটি অক্ষর। চারটি অক্ষরকে একত্রিত করলে একটা শব্দ হয়ে যায়। সেটা হলো হিব্রু ‘বাটিয়া’ শব্দ যার অর্থ ‘ঈশ্বরের কন্যা’।
এগুলো নিশ্চয় মিসেস গাজেনের হাতের লেখা, তাহলে হিব্রু তিনি জানতেন, ভাবল আহমদ মুসা। আহমদ মুসার মনে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে।
আপনাতেই আহমদ মুসা বলল, ‘একটা কিছু লেখা দেখলাম। কিন্তু বুঝলাম না।’ বলেই আহমদ মুসা সিঁড়ির দিকে চলল।
উপরে উঠে এল আহমদ মুসা আয়াকে সাথে নিয়ে।
উপরে চারটি রুম। একটা ড্রইং, একটা মাস্টার বেড, একটি অতিথি কক্ষ এবং একটি স্টাডি রুম। মাস্টার বেড রুমের সাথে আরেকটা ছোট কক্ষ আছে। ওটা ড্রেসিং রুম।
মাস্টার বেডে ঢুকেই আহমেদ মুসা দেয়ালে দেখল একটা ছবি টাঙানো। নবযৌবনা এক মহিলা।
‘মিসেস গাজেনের ছবি, না?’ জিজ্ঞেস করল আহমদ মুসা আয়াকে।
‘জি হ্যাঁ, অনেক আগের ছবি তাঁর।’ বলল আয়া।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top