একটু চোখ বুলিয়ে নিন
এই কাহিনী বাস্তব ঘটনা অবলম্বনে
০১,
কে ওর পিছু নিয়েছে? এমন হিংস্র অনুসরণকারীদের জগৎ আলাদা। তারা এক অন্ধকার জগতের বাসিন্দা। সেই জগতের সঙ্গে আ্যাশলের কোন যোগাযোগই নেই। কে ওর ক্ষতি করতে চায়? এই আতঙ্ক তাড়াতে প্রাণপণে চেষ্টা করছিল আ্যাশলে। তবুও আজকাল রাতে সে শুধু দুঃস্বপ্ন দেখে। ভোরবেলা ঘুম ভাঙে আতঙ্কের মধ্যে। আশলে ভাবে, হয়তো এসবই তার কল্পনা । বোধ হয় খুব বেশি পরিশ্রম করে ফেলছে। যার ভার শরীর নিতে পারছে না। একটা ছুটির প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। আয়নায় নিজের শরীরের প্রতিফলন দেখে অ্যাশলে। বুদ্ধিদীপ্ত দোহারা চেহারার মধ্যকুড়ির এক যুবতী। কাঁধের ওপর কালো চুলের রাশ। সে তন্বী, আকর্ষণীয়া। কিন্তু বাদামি চোখে উদ্বেগের ছাপ। আয়না থেকে চোখ সরিয়ে সে রান্নাঘরের দিকে এগোয়। যা ঘটেছে সব ভুলতে চেষ্টা করে। টোস্ট, ওমলেট আর কফি নিয়ে খাবার টেবিলে এসে বসে। কিন্তু খেতে ইচ্ছে করে না। উদ্বেগ তার খাওয়ার আগ্রহও কেড়ে নিয়েছে। রাগান্বিত হয়ে সে ভাবে -এটা চলতে দেওয়া যায় না। যেই হোক, আমার সঙ্গে এরকম করতে দিতে পারি না আমি।
অ্যাশলে ঘড়ি দেখে । এবার কাজে বেরোতে হবে । বেরোবার আগে সে তার সুন্দর করে সাজানো বাসস্থানটার দিকে একবার তাকায়। ভিয়া কামিনো ফোর্ট বহুতলের চারতলায় তার ফ্ল্যাট । ক্যালিফোর্নিয়ার ক্যাপেরটিনোর এই ফ্ল্যাটটা অ্যাশলের খুব পছন্দের । সারাজীবন : সে এখানেই কাটিয়ে দেবে ভেবেছিল । কিন্তু এখনকার পরিস্থিতিতে সে অন্য একটা বাসস্থান ঠিক করেছে নিজের জন্য । যাতে কেউ তার খোঁজ না পায়। ক্ষতি করতে না পারে। দরজাটা টেনে বন্ধ করে সে আবার টেনে দেখে নেয় যে সেটি ঠিকমত বন্ধ হয়েছে কিনা। তারপর এলিভেটরে নিচে নেমে আসে। গ্যারাজটা নিস্তব্ধ, জনমানবশূন্য। এলিভেটরের দরজা থেকে ২০ গজ দুরে ওর গাড়িটা দাঁড় করানো রয়েছে। প্রায় ছুটে গিয়ে সে গাড়িতে উঠে যায়। দরজাটা তাড়াতাড়ি বন্ধ করে। উত্তেজনায় বুক টিপটিপ করে । ডাউনটাউনের দিকে গাড়ি ছুটতে থাকে । আকাশে ঘন মেঘ । আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস আজ প্রবল বৃষ্টি হবে। অ্যাশলে ভাবে আজ বৃষ্টি হবে না। সূর্য উঠবে। ভগবানের সঙ্গে একটা ডিল করে অ্যাশলে। যদি বৃষ্টি না হয়ে সূর্য ওঠে তবে বোঝা যাবে সব আগের মতই আছে। সব আ্যাশলের কল্পনা ।
দশ মিনিট পরে অ্যাশলে গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছিল প্যাটারসন ডাউনটাউন ক্যাপেরটিনোর রাস্তা দিয়ে। কয়েক বছর আগে এই রাস্তাটা ছিল নির্জন। আজ কমপিউটারের জাদুতে দ্রুত পরিবর্তিত হয়ে গেছে। আজ জায়গাটার নামই হয়ে গেছে সিলিকন ভ্যালি। অ্যাশলে এই কম্পিউটার ভ্যালির একটা কোম্পানি গ্লোবাল কম্পিউটার গ্রাফিক্স করপোরেশন-এর একজন কর্মী। দুশো জন কর্মী এই কোম্পানির । সিলভারতে স্ট্রিট দিয়ে যাবার সময় তার মনে হল কেউ তার পিছু নিয়েছে। কেন? রিয়ার উইন্ডোতে চোখ রেখে কাউকে দেখা গেল না। যদিও সব স্বাভাবিক তবুও আ্যাশলের ইন্দ্রিয় যেন অন্য কিছুর ইঙ্গিত দিচ্ছে। এবার সে পৌঁছে গেল গ্লোবাল কম্পিউটারের অফিসে । পার্কিং জোনে গাড়ি রেখে সে অফিসে ঢুকল।
তখনই বৃষ্টি শুরু হল। সকাল নটার মধ্যেই গ্লোবাল কর্মব্যস্ত হয়ে উঠেছে। অফিসের প্রায় সবাই এসে গেছে। তার নাম ধরে কেউ ডাকল। তার ওপরওয়ালা শেন মিলার।
মিলার মধ্য তিরিশের সুঠাম পুরুষ । অ্যাশলে যখন নতুন চাকরিতে যোগ দেয় তখন মিলার তাকে বিছানায় নিয়ে গিয়ে তোলবার অনেক চেষ্টা করেও পারেনি । এখন হাল ছেড়ে দিয়ে তারা ভাল বন্ধু। আশলে ঘরে ঢুকতেই শেন একটা টাইম পত্রিকা ওর দিকে এগিয়ে দিয়ে বলে, একজন অতি বিখ্যাত বাবার সন্তান হতে কেমন লাগে অ্যাশলে?-
আাশলে হেসে বলে-দারুণ।- টাইম পত্রিকার প্রচ্ছদ ছবি ও ক্যাপশন, ডাঃ স্টিভেন প্যাটারসন। মিনি হার্ট সার্জারির জনক, মিলার বলে, দেখতো, এর জন্য কিছু করতে পারো নাকি?- বলে একটা ছবি এগিয়ে দেয়। ছবিটা একজন চলচ্চিত্র তারকার । প্লোবালের এক ক্লায়েন্ট একটা বিজ্ঞাপনে একে ব্যবহার করবে । কিন্তু ডেসিয়ের ১০ পাউন্ড ওজন বাড়িয়ে বসে আছে । চোখের তলা ফোলা । দেখো যদি সামলাতে পারো ।-
অ্যাশলে ছবিটার দিকে দেখে । বলে,দেখে মনে হয় কিছু করা যাবে । নিজের টেবিলে চলে আসে সে। এই সংস্থার একজন গ্রাফিক ডিজাইনার সে। বিজ্ঞাপন বিভাগে কাজ করে। তিরিশ মিনিট পরে তার মনে হল কেউ তাকে লক্ষ্য করছে। মুহূর্তে সজাগ হয়ে উঠল সে। চোখ তুলে তাকিয়ে দেখল, ডেনিস টিব্বলে। টিব্বলে গ্লোবাল কম্পিউটার গ্রাফিক্সের কম্পিউটার জিনিয়াস। নিখুত কাজের জন্য অফিসে সে যাদুকর বলে পরিচিত। তিরিশ ছুই ছুই টিব্বলে রোগা, টাক মাথার অবদমিত ব্যক্তিত্বের মানুষ। প্লোবাল-এ রটনা, টিববলে আর আ্যাশলের পরস্পরের সঙ্গে সম্পর্ক আছে। ডেনিস টিব্বলে বলল,সুপ্রভাত, কোন সাহায্যের দরকার আছে?-না, ধন্যবাদ।- আ্যাশলে জবাব
দেয়। শনিবার রাতে আমরা কি একসঙ্গে ডিনার করতে পারি?
না, এ দিন আমি ব্যস্ত থাকবো। ডেনিস তির্যক হেসে বলে, ব্যস্ত মানে তো বড়সাহেবের সঙ্গে রাতের খাওয়া আর… অ্যাশলে ধমকে ওঠে। -এটা তোমার দেখার…
সম্পূর্ণ বইটি পড়তে চাইলে নিচের ডাউনলোড বাটনে ক্লিক করে বইটি ডাউনলোড করে নিন।