এ স্ট্রেঞ্জার ইন দ্য মিরর - সিডনি শেলডন (A Stranger in the Mirror By Sidney Sheldon)

এ স্ট্রেঞ্জার ইন দ্য মিরর – সিডনি শেলডন (A Stranger in the Mirror By Sidney Sheldon)

একটু চোখ বুলিয়ে নিন

দর্পণে কার মুখ?

সুচনা :
১৯৬৯-র আগস্টের শুরুতে নিউইয়র্ক বন্দর থেকে লা হাভর বন্দরগামী পঞ্চান্ন হাজার টন ওজনের লাক্সারী লাইনার এস, এস, ব্রিট্যানীর বুকে শনিবারের এক সকালে সমুদ্রযাত্রার প্রস্তুতির সময় অনেকগুলো অদ্ভুত ও অযৌক্তিক ঘটনা ঘটে গেল।

খুটিনাটি সম্বন্ধে অতি সচেতন ও কর্মদক্ষ চীফ পারসার ক্ল্যদ দেসাদ জাহাজে পনেরো বছর ধরে চাকরী করছে। যে কোন পরিস্থিতি দক্ষতার সঙ্গে, গোপনীয়তা বজায় রেখে সামলাতে সে খবুই পটু । এস, এস, ব্রিট্যানী ফরাসী জাহাজ এবং সেই পরিপ্রেক্ষিতে এই কাজটা খুবই কঠিন।

কিন্তু গ্রীষ্মের এই সকালে হাজারটা শয়তান যেন তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছিল। সংবেদনশীল গল্-দেশীয় ব্যক্তিত্বের অন্তলীন অহমিকায় সেদিন যে আঘাত লেগেছিল, পরবর্তীকালে আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোল-এর মার্কিন ও ফরাসী শাখা এবং স্টীমশিপ কোম্পানীর নিজস্ব সিকিউরিটি শাখা এই ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে যুক্তিসঙ্গত কোন সিদ্ধান্তে না পৌঁছলেও ক্ল্যদ দেসাদ-এর আহত অহংবোধের সম্পূর্ণ নিরাময় হয়নি।

যেহেতু ঘটনাটা ঘটেছিল বিখ্যাত ব্যক্তিদের কেন্দ্র করে। কাহিনীটা পৃথিবীর অধিকাংশ সংবাদপত্রে বড় বড় হেডলাইনে ছাপা হয়েছিল। কিন্তু রহস্য ভেদ করা কারো পক্ষেই সম্ভব হয়নি।

ক্ল্যদ দেসার্দ ট্র্যান্স আ্যাটলান্টিক স্টামাশিপ লাইন থেকে রিটায়ার করে নিজে একটা রেস্তোরাঁ খুলেছিল। আগস্ট মাসের সেই অদ্ভুত ও অবিস্মরণীয় দিনের গল্প সে সবাইকে শোনাতো।

…দেসার্দ বলতো, আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের পাঠানো উপহার ফুলগুলো আসার সঙ্গে সঙ্গেই ঘটনার শুরু।

সমুদ্রযাত্রার শুরু করার ঠিক এক ঘন্টা আগে হাডসন নদীর জেটির সামনে এলো সরকারী লাইসেস-প্লেট-লাগানো কালো লিমুজিন গাড়ী। কাঠকয়লার রঙের ধুসর সুট পরা এক ভদ্রলোক জুনিয়র ডেক অফিসার আ্যালা-সাফ-এর হাতে ছত্রিশটা স্টারলিং সিলভার গোলাপের তোড়া তুলে দিয়ে কয়েকটা কথা বললেন। পরে ফুলগুলো গেল
জুনিয়র ডেক অফিসার জানির হাতে। সে ফুলগুলো যথাস্থানে পৌঁছে দিয়ে জাহাজের চীফ পারসার ক্ল্যদ দেসাদ-কে জানালো প্রেসিডেন্ট ফুল পাঠিয়েছেন মাদাম টেমপলকে।

মাদাম টেমপল অর্থাৎ, মিসেস জিল টেমপল। গত এক বছরে সবকটা দৈনিক সংবাদপত্র ও ম্যাগাজিনের সামনের পাতায় এই মহিলার ফটো ছাপা হয়েছে। নিউইয়র্ক, ব্যাংকক, প্যারী ও লেনিনগ্রাদের সব পত্রপত্রিকায়। পৃথিবীর কোন মহিলা সবচেয়ে বেশী আকর্ষণীয়। এই শীর্ষক সাম্প্রতিক পোলে সবচেয়ে বেশী ভোট পেয়েছেন এই মহিলা ।নবজাতিকাদের নাম রাখা হয় তার নামে। জিল টেমপল এখন অ্যামেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের এক জনপ্রিয় নায়িকা । তার সাহস, আশ্চর্য সংগ্রাম এবং নিয়তির নির্মম পরিহাসে তার পরাজয় : এসব পৃথিবীর মানুষের কল্পনাকে উদ্বুদ্ধ করে। তাঁর জীবনকাহিনী শুধু অসাধারণ এক প্রেমকাহিনী নয়। গ্রীক নাটক ও ট্র্যাজেডির সব উপাদানই আছে তার
জীবনে ।

ফরাসী নাগরিক ক্ল্যদ দেসার্চ আমেরিকানদের খুব একটা পছন্দ করে না। কিন্তু মাদাম টবি টেমপলের কথা আলাদা । মাদামের সমুদ্র যাত্রার অভিজ্ঞতা যেন আনন্দদায়ক ও মনে রাখার মত হয়, তা সে দেখবে।

প্যাসেঞ্জার-লিস্টে অন্যান্য প্যাসেঞ্জারদের নামের ওপর চোখ বোলাচ্ছে ক্ল্যদ দেসার্দ। আমেরিকানরা যাদের ভি. আই. পি. বলে তাদের অনেকেরই নাম আছে লিস্টে। অবশ্য মানুষের গুরুত্ব সম্বন্ধে আমেরিকানদের ধারণা খুবই অদ্ভূত।

এক ধনী শিল্পপতির বউ জাহাজে একা যাচ্ছেন দেখে লিস্ট খুঁজে নিগ্রো ফুটবল খেলোয়াড় (এবং মহিলার প্রেমিক) ম্যাট এলিসের নাম খুঁজে পেয়ে খুব খুশী হল ক্ল্যদ দেসাদ। পাশাপাশি কেবিনে রয়েছেন নামজাদা এক মার্কিন সিনেটর এবং ক্যারোলিনা রককা নামের এক দক্ষিণ আমেরিকান রূপসী, যে স্ট্রিপটিজ নাচে নগ্ন শরীরের ছলাকলা দেখায়। ওদের দুজনের যৌন সম্পর্কের ব্যাপারে অনেক কেচ্ছা কাহিনী ছাপা হয়েছে খবরের কাগজে ।

লিস্টে আরও নাম। ডেভিড ক্যানিয়ন। সুদর্শন, আথলিটের মত চেহারা, স্বল্পবাক এবং ধনী। ওকে ক্যাপটেনের টেবিলে ঠাই দিতে হবে।

ক্লিফটন লরেন্স। শেষ মুহূর্তে এই জাহাজে কেবিন বুক করেছেন। হ্যাঁ, এখন প্রশ্ন হল, ক্যাপটেনের টেবিলে মঁসিয়ে ক্লিফটন লরেন্সকে ঠাই দেবে চীফ পারসার ক্ল্যদ দেসার্দ? না, দেবে না? এককালে হলিউডের বহু বিখ্যাত চিত্রাভিনেতা ও ব্রডওয়ের বহু নাট্যাভিনেতা অভিনেত্রীর এজেন্ট ছিলেন এই ক্লিফটন লরেন্স। কিন্তু আজ তার সুখের দিন ফুরিয়েছে। আগে হলে ক্লিফটন লরেন্স দামী কেবিন চাইতেন। এখন তিনি নিয়েছেন লোয়ার ডেকের
একটা মাত্র ঘর। ওর ব্যাপারে কিছু করার আগে নামগুলো দেখা দরকার ।

এই জাহাজে চলেছেন ছোটখাট দেশের এক রাজা, বিখ্যাত এক অপেরা-গায়িকা এবং এমন একজন রাশিয়ান ওপন্যাসিক, যিনি নোবেল পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করেছেন।

দরজায় করাঘাতের শব্দ হয়। আঁতোয়া নামের এক পোর্টার ভেতরে ঢোকে।

ইয়েস… কি হয়েছে, অ্যাঁতোয়া?

আপনি কি থিয়েটার লক করার অর্ডার দিয়েছেন?

তার মানে?

দরজা ভেতর থেকে বন্ধ। ভেতরে বোধহয় ফিলম দেখানো হচ্ছে?

জাহাজ যখন বন্দরে থাকে, তখন ফিলম দেখানো হয় না। তাছাড়া ওই দরজা কখনও লক করা হয় না। আমি ব্যাপারটা দেখছি…

কিন্তু ছোটখাট সব ব্যাপারের দেখাশোনা করতে আরও আধঘন্টা গেল। ক্যাপটেন বিয়ে উপলক্ষ্যে যে উপহার-এর অর্ডার দিয়েছিলেন তা ভুলে অন্য জাহাজে গেছে। ক্যাপটেন……

সম্পূর্ণ বইটি পড়তে চাইলে নিচের ডাউনলোড বাটনে ক্লিক করে বইটি ডাউনলোড করে নিন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top