একটু চোখ বুলিয়ে নিন
১
ওয়াশিংটন।
প্রধান রাস্তা থেকে এফ.বি.আই হেডকোয়ার্টার বেশ ভেতরে।
প্রধান রাস্তা থেকে লাল পাথরের একটা প্রশস্ত পথ, গিয়ে পৌঁছেছে বিশাল বিল্ডিং-এর গাড়ি বারান্দায়। প্রধান রাস্তাটিও গাড়ি বিরল।
পটোম্যাক নদীর এ এলাকাটা এমনিতেই জনবিরল। তার উপর আজ শনিবার। হঠাৎ দুএকটা দ্রুত গতির গাড়ি চোখে পড়ার পরই আবার হারিয়ে যাচ্ছে।
আহমদ মুসার গাড়ি সবে এই রাস্তায় গিয়ে পড়েছে।
রাস্তার দুই পাশে গাছের সারি। রাস্তার এক পাশ ধরে আহমদ মুসার গাড়ি দ্রুত এগিয়ে চলছে।
আহমদ মুসার চোখের দৃষ্টি সামনে প্রসারিত। হঠাৎ আহমদ মুসার চোখে পড়ল কিছু দূর সামনে একটা গাড়ি রাস্তার বাইরে নিয়ে পার্ক করা।
দুজন লোক গাড়িতে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে। একজনের হাতে একটা ওয়াকিটকি।
আহমদ মুসার গাড়ি ঐ সমান্তরালে যেতেই দুজনের একজন হাত তুলে আহমদ মুসার গাড়ি থামাতে বলল। ড্রাইভার গাড়ি দাঁড় করাল। গাড়ি দাঁড়াতেই দুজন এগিয়ে এল। ওয়াকিটকিধারী ওয়াকিটকিতে কথা বলছিল। তার শেষ কথাটা আহমদ মুসা শুনতে পেল, ‘বুঝলাম, তাকে যেতে দেব না। ওকে কমপক্ষে এক ঘন্টা আটকে…… ঠিক আছে।’
ওয়াকিটকিধারী আহমদ মুসাকে বলল, ‘তুমি কি শেখ আবদুল্লাহ আলী?’
‘জি, হ্যাঁ।’ শেখ আবদুল্লাহ আলী রূপী আহমদ মুসা উত্তর দিল।
‘এদিকে কোথায় যাচ্ছ? এ রাস্তা বন্ধ, এদিকে এখন যাওয়া যাবে না।’
বলে ড্রাইভারকে লক্ষ্য করে নির্দেশ দিল, ‘গাড়িটা রাস্তার বাইরে ওদিকে নিয়ে যাও।’
‘আমি যাচ্ছি এফ.বি.আই প্রধান জর্জ আব্রাহামের সাথে দেখা করতে ৫টায় তার সাথে আমার এ্যাপয়েন্টমেন্ট’ বলল শেখ আবদুল্লাহ রূপী আহমদ মুসা।
লোকটি মুখ বাঁকা করে বলল, ‘জর্জ আব্রাহামের সাথে মৌলবাদীর কি দরকার! সন্ত্রাসী আহমদ মুসার পক্ষে তদবীর করতে? সৌদি সরকার পাঠিয়েছে? তা যাবে, ঘন্টা খানেক পরে।’
কথা শেষ করে আবার নির্দেশ দিল ড্রাইভারকে, ‘গাড়ি ঘুরাও। নিয়ে চল ওদিকে।’
আহমদ মুসা বিস্মিত হলো, এরা যদি শেখ আবদুল্লাহ আলীর জন্য এই ব্যবস্থা করে থাকে, তাহলে আহমদ মুসার জন্য এরা কি আয়োজন করে রেখেছে আল্লাহই জানে।
ড্রাইভার নির্দেশের জন্য আহমদ মুসার দিকে তাকাল।
আহমদ মুসা ড্রাইভারকে কিছু না বলে ওয়াকিটকিধারীর দিকে চেয়ে বলল, ‘একবার বলছেন রাস্তা বন্ধ। আবার বলছেন এক ঘন্টা যাওয়া যাবে না। রাস্তাটা কি এক ঘন্টা বন্ধ থাকবে?’
‘ওসব কথা নয়। তোমার যাওয়া হবে না। জর্জ আব্রাহামের কাছে আহমদ মুসার পক্ষে দালালী করতে তোমাকে আমরা যেতে দেব না।’ বলল ওয়াকিটকিধারী।
‘বারবার আহমদ মুসার সাথে আমাকে যুক্ত করছেন কেন? তার সাথে আমার এই যাওয়ার কি সর্ম্পক?’ হাসল শেখ আবদুল্লাহ আলী রূপী আহমদ মুসা।
‘ইস ন্যাকা সাজা হচ্ছে! ও নিয়েছে ৬টায় অ্যাপয়েন্টমেন্ট, আর তুমি নিয়েছ ৫টায় অ্যাপয়েন্টমেন্ট! বিনা যোগাযোগে? তুমি গিয়ে সৌদি সরকারের পক্ষ থেকে আহমদ মুসার জন্য তদবির করে আসবে, এরপর আহমদ মুসা যাবে ফায়দা নেবার উদ্দেশ্যে, এ সহজ কথাটা আমরা বুঝিনা, না?’ আহমদ মুসা মনে মনে হাসল। মনে মনেই বলল, বুঝবে না কেন, তোমরা তো একটা বুদ্ধির ঢেকি! প্রকাশ্যে বলল, ‘ঠিক আছে তাহলে ফিরে যাই।’
‘না ফিরে যেতে পারবে না।’
‘কেন?’