ব্লাডলাইন - সিডনি শেলডন (Bloodline By Sidney Sheldon)

ব্লাডলাইন – সিডনি শেলডন (Bloodline By Sidney Sheldon)

একটু চোখ বুলিয়ে নিন

১. একা এবং অন্ধকার

প্রথম পর্ব

০১
ইস্তানবুল। শনিবার, ৫ই সেপ্টেম্বর । রাত দশটা।
হাজিব কাফির-এর ডেস্কের পেছনে সে বসেছিল-একা এবং অন্ধকারে। অফিসের জানলায় ধুলো পড়েছে। নগরীর প্রাচীন মিনারগুলির দিকে তার দৃষ্টি নিবদ্ধ । পৃথিবীর বহু দেশ সে ঘুরেছে। তবে ইস্তানবুলের মতো আর কোনো শহরকে সে ভালোবাসতে পারেনি । সাধারণত ট্যুরিস্টরা ইস্তানবুলে আসে, বেইওলগু স্ট্রিটে ঘোরাফেরা করে, হিলটন হোটেলের ঝকঝকে লালেজার বারে যায়। কিন্তু সে সেইসব জায়গায় ভ্রমণ করে যার অবস্থান কেবল মুসলমানরাই জানে । সে যায় ইয়ালিতে, স্যুকের পেছনে সেই ছোটো বাজারে । হয়তো বা ঘুরে বেড়ায় গোরস্থানে, যেখানে তেল্লিবাবার নামে সমাধিস্থল আছে। মৃত ব্যক্তির উদ্দেশ্যে যেখানে প্রার্থনা জানায়।

সে বসে আছে ধৈর্য সহকারে, ঠিক যেন একটি শিকারি, শিকারের সন্ধানে ওৎ পেতে বসে আছে। তার দেহ ও মন দুটিই শান্ত। ওয়েলসে তার জন্ম হয়েছে। শ্যামলা সুন্দর চেহারা তার, ঝড়ের মতো গতিময় আচরণ । মাথা ভর্তি কালো চুল। শক্ত ও কঠিন মুখ। ঘন নীল রঙের দুটি চোখ। সেখানে তীক্ষতা ও বুদ্ধির আভাস খেলা করছে। লম্বায় সে ছ-ফুটের বেশি। সে রোগা, তবে দেহের কোথাও মাংসের অভাব ঘটেনি ।

অফিসময় হাজিব কাফিরের উপস্থিতি ছড়িয়ে রয়েছে। তামাকের মিষ্টি অথচ দুর্গন্ধ বাতাসে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তুর্কি কফির চড়া গন্ধ, তার মোটা তৈলাক্ত শরীরের গন্ধও ভাসছে। অথচ সে অর্থাৎ রিস্‌ উইলিয়ামস এসব গন্ধ-টন্ধ টের পায় না।

খানিক আগে একটা টেলিফোন পেয়েছে সে শ্যামনিজ থেকে । অ্যাক্সিডেন্টের খবর ।

মিঃ উইলিয়ামস, অভাবিতভাবে ঘটনাটা ঘটে গেল। আমরা আশ্চর্য হয়ে যাচ্ছি! মিস্টার রফের মৃত্যু ঘটেছে। নিমেষের মধ্যে দুর্ঘটনাটা ঘটে গেল। বিশ্বাস করুন, আমরা ওকে সাহায্য করার মতো একটু ফুরসত পেলাম না।

পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহৎ ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থা রফ এন্ড সন্স। স্যাম রফ ছিলেন ওই সংস্থার প্রেসিডেন্ট। উত্তরাধিকার সুত্রে তিনি এই ব্যবসা লাভ করেছেন। পেয়েছেন বহু মিলিয়ন ডলার মুলধন। বিশ্বের নানা জায়গায় ছড়িয়ে আছে এই প্রতিষ্ঠানের শাখা, অফিস ও কারখানা ।

রিস, বিশ্বাস করতে পারছে না যে, স্যাম রফ আর বেঁচে নেই। অথচ রফের মধ্যে প্রাণশক্তির অভাব ছিল না। বিশ্বের নানা দেশে তাকে প্লেনে চেপে যেতে হত। কোম্পানির অফিস এবং ফ্যাক্টরিগুলো ঘুরে দেখতে হত। যে-কোনো সমস্যার চটজলদি সমাধান করতে পারত সে। সে বিবাহিত। একটি সন্তান আছে তার। তবে সংসারের থেকে ব্যবসার প্রতি তার আকর্ষণ বেশী ছিল। এককথায় অসাধারণ ও বুদ্ধিমান পুরুষ ছিল স্যাম। মাত্র বাহান্ন বছরে সে পরপারের যাত্রী হল। এবার এই বিশাল সাম্রাজ্যের দায়িত্বভার কে গ্রহণ করবে?

হঠাৎ অফিসের আলো জ্বলে উঠল। রিসের চমক ভাঙল। চোখ ঝলসে গেল।

মিস্টার উইলিয়ামস, আপনি! আমি জানতাম না আপনি এখানে আছেন। সোফি, রিস্‌ উইলিয়ামসের সেক্রেটারি, ইস্তানবুলে এলে সোফিই তার দেখভাল করে । সোফি জাতে তুর্কি। পঁচিশ বছরের সুন্দর, স্লিম ও সেক্সি চেহারা ।

সে বহুবার রিসকে তার শয্যাসঙ্গী হওয়ার আমন্ত্রণ জানিয়েছে। অবশ্য রিসের যদি আপত্তি না থাকে । রিস এ ব্যাপারে কোনো উৎসাহ দেখায় না।

সে বলল -সোফি, মিস্টার কাফিরের খোঁজ লাগাও । ক্যারাভান সরাই, নতুবা মারমারায় খুজে দেখো ।

কাফিরের রক্ষিতা জনৈকা বেলি ডান্সার থাকে ক্যারাভান সরাইতে। রিস্‌ ভাবল, ওখানেই তার সন্ধান মিলতে পারে। তবে স্ত্রীর কাছে চলে যাওয়াও কাফিরের পক্ষে বিচিত্র কিছু নয়।

-আমি দেখছি।

-ও যেন এক ঘন্টার মধ্যে অফিসে এসে হাজির হয়। ওকে বলে দিও, নয়তো চাকরি থেকে কাট হতে হবে।

-ঠিক আছে, মিস্টার উইলিয়ামস।

আলো দরকার নেই । নিভিয়ে দাও।

সম্পূর্ণ বইটি পড়তে চাইলে নিচের ডাউনলোড বাটনে ক্লিক করে বইটি ডাউনলোড করে নিন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top