একটু চোখ বুলিয়ে নিন
পাপের প্রায়শ্চিত্ত
হালবের বাইরে অনুষ্ঠিত তিন মুসলিম আমীরের বৈঠক সমাপ্ত হয়েছে। তারা সুলতান আইউবীর উপর আক্রমণ করার পরিকল্পনা ঠিক করে ফেলেছেন। খৃস্টান উপদেষ্টাদের পরামর্শ বেশী গ্রহণ করা হয়েছে। বাহিনীত্রয়ের বিন্যাস কিরূপ হবে, তারা তা-ও ঠিক করে নিয়েছে। গোমস্তগীনের বাহিনী অগ্রে থাকবে। তার উভয় পার্শ্বের নিরাপত্তা বিধানের দায়িত্ব হালবের বাহিনীর। প্রথম হামলার পর দ্বিতীয় হামলার দায়িত্ব- যা সুলতান আইউবীর জবাবী হামলাকে প্রতিহত করার জন্য পরিচালিত হবে সাইফুদ্দীনের উপর ন্যাস্ত করা হয়েছে। সাইফুদ্দীন তার বাহিনীর একটি অংশকে তার ভাই ইজুদ্দীনের কমান্ডে রেখে এসেছেন। এটি সম্মিলিত বাহিনীর সঙ্গে তার প্রতারণা। সম্মিলিত বাহিনীকে তিনি বুঝ দিয়েছেন যে, আমি তাদেরকে রিজার্ভ রেখে এসেছি এবং বিশেষ পরিস্থিতিতে তাদেরকে ব্যবহার করা হবে। কিন্তু তিনি ভাইকে বলে গেছেন, তুমি হাররানের বাহিনীর অবস্থা বুঝে সম্মুখে অগ্রসর হবে। যুদ্ধের পরিস্থিতি যদি আমাদের প্রতিকূল হয়ে যায়, তাহলে রিজার্ভ বাহিনীকে মসুলের প্রতিরক্ষায় ব্যবহার করা হবে। আর যদি জবাবী আক্রমণে অংশগ্রহণ করতেই হয়, তাহলে এই অংশগ্রহণ এমনভাবে করতে হবে যে, আমরা মসুল ও নিজেদের স্বার্থের প্রতি বেশী লক্ষ্য রাখবো।
রমযান মাস শুরু হয়ে গেছে। তিন বাহিনীর মাঝে থোষণা করে দেয়া হয়েছে, যুদ্ধের সময় রোযা রাখা ফরজ নয়। তিন-চারদিন পর বাহিনীগুলো আপন আপন শহর ত্যাগ করে রওনা হয়ে যায়। কথা আছে, তারা হামাতের নিকট এসে একত্রিত হবে এবং আক্রমণের বিন্যাসে প্রস্তুত হয়ে যাবে।
এই তিন বাহিনীর রওনা হওয়ার দুদিন আগের ঘটনা। সুলতান আইউবী তার মোর্চা পর্যবেক্ষণ করছেন। ইত্যবসরে তিনি সংবাদ পান, হাররান থেকে দুজন সালার পালিয়ে চলে এসেছেন এবং তাদের সঙ্গে একটি লাশ আছে।
সুলতান আইউবী ঘোড়া হাঁকান। গন্তব্যে গিয়ে ঘোড়া থেকে লাফিয়ে অবরতণ করেন এবং সালারদ্বয়কে বুকে জড়িয়ে ধরেন। তারপর সিপাহীদ্বয়ের সঙ্গেও আলিঙ্গনাবদ্ধ হন। এরা দুজন তার নামকরা গেরিলা গোয়েন্দা ছিলো। কমান্ডারও তার গুপ্তচর ছিলো, যিনি দীর্ঘ সময় পর্যন্ত গোমস্তগীনের সেনাবাহিনীতে কর্মরত ছিলেন। সুলতান আইউব লাশটির গালে চুমো খান এবং লাশটি দামেস্ক পৌঁছে দেয়ার এবং শহীদদের কবরস্তানে দাফন করার নির্দেশ প্রদান করেন।
আপনি এখানে বসে কী ভাবছেন? সালার শামসুদ্দীন নিজের কাহিনী শুনানোর আগেই যুদ্ধ বিষয়ে আলোচনা শুরু করে দেন।
আমি রিজার্ভ বাহিনীর এসে পৌঁছার অপেক্ষা করছি- সুলতান আইউবী বললেন- গত রাতে সংবাদ পেয়েছি, বাহিনী আজ রাতে পৌঁছে যাবে। তারা কায়রো থেকে আসবে। সে কারণেই এতোদিন লেগে গেছে।
সুলতান আইউবী তার সেনাসংখ্যা কত এবং তাদেরকে কিভাবে বিন্যস্ত করে রেখেছেন দুভাইকে তার বিবরণ দেন।
সুলতান তখনই তার সকল ইউনিটের কমান্ডারদের ডেকে পাঠান এবং শামসুদ্দীন ও শাদবখত-এর সঙ্গে তাদের সাক্ষাৎ করিয়ে দেন। পুরাতন অফিসারগণ তাদেরকে চেনেন।
সুলতান আইউবী বললেন—