একটু চোখ বুলিয়ে নিন
নিমেষ যখন প্রথম কোলকাতায় পা রেখেছিল তখন রাস্তায় ট্রাম জুলছে, গুলি চলছে । উত্তরবঙ্গ থেকে আসা এই তরুণটি সেদিন দুর্ঘটনার শিকার হয়েছিল । তারপর আর
পাচটা মানুষের মত গা ভাসিয়ে ভেসে যেতে যেতে হঠাৎ তার জীবনের মোড় পাল্টালো । ছাত্র-রাজনীতি তাঁকে নিয়ে গেল জটিল আবর্তে । এই দেশে আর দেশের মানুষের পাশে দাড়ানোর নিচে গিয়ে দাড়াল । কিন্তু মনুষ্যত্ব এবং মানবিক মূল্যবোধ তাকে সরিয়ে নিয়ে এল উদ্ন রাজনীতিতে । সত্তরের সেই আগুনে ঝাঁপ দিয়ে নিজেকে দগ্ধ করে সে দেখল, দাহ্যবস্তুর কোন সৃষ্টিশীল ক্ষমতা নেই । পুলিশের নির্মম অত্যাচারে সে যখন বিকলাঙ্গ তখন বিপ্লবের শরিকরা হয় নিঃশেষ নয় গুছিয়ে নিয়েছে আখের । অনিমেষ অবাক হয়ে দেখল মাধবীলতাকে । মাধবীলতা কোন রাজনীতি করেনি কখনো, শুধু তাকে ভালবেসে আলোকস্তন্তের মত একা মাথা তুলে দাড়িয়ে আছে। খরতপ্ত মধ্যাহ্ছে যে এক না। বাংলাদেশের এই মেয়ে যে কিনা শুধু ধূপের মত নিজেকে পোড়ায় আগামীকালকে সুন্দর করতে । দেশ গড়ার জন্যে বিপ্লুবের শিক্ষল হতাশায় ডুবে যেতে যেতে অনিমেষ আবিষ্কার করেছিল বিপ্রবের আর এক নাম মাধবীলতা | ‘দেশ’ পত্রিকায় ধারাবাহিক প্রকাশের সময় এই দুটি চরিত্র লক্ষ পাঠকের ভালবাসা পেয়েছিল । সুস্থ
উপন্যাসের সেইখানেই সার্থকতা |
লেখক সম্পর্কে
সমরেশ মজুমদারের জন্ম ১০ মার্চ ১৯৪৪। শৈশব কেটেছে ডুয়ার্সের চা-বাগানে। জলপাইগুড়ি জেলা স্কুলের ছাত্র। কলকাতায় আসেন ১৯৬০-এ। শিক্ষা: স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে বাংলায় অনার্স, পরে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের এম.এ! লেখালেখি! প্রথমে গ্রুপ থিয়েটার করতেন। তারপর নাটক লিখতে গিয়ে গল্প লেখা। প্রথম
গল্প “দেশ’ পত্রিকায়, ১৯৬৭ সালে। প্রথম উপন্যাস “দৌড়”, ১৯৭৫-এ “দেশ’ পত্রিকায়। গ্রন্থ: দৌড়, এই আমি রেণু, উত্তরাধিকার, বন্দীনিবাস, বড় পাপ হে, উজান গঙ্গা, বাসভূমি, কালবেলা, কালপুরুষ এবং আর অনেক। সম্মান: ১৯৮২ সালের আনন্দ পুরস্কার তার যোগ্যতার স্বীকৃতি। এ ছাড়া “দৌড়’ চলচ্চিত্রের কাহিনীকার হিসাবে বি এফ জে এ, দিশারী এবং চলচ্চিত্র প্রসার সমিতির পুরস্কার। ১৯৮৪ সালে ‘কালবেলা; উপন্যাসের জন্য পেয়েছেন সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার।