একটু চোখ বুলিয়ে নিন
কেটি ব্লাকওয়েল
গল্প শুরর আগে
কেটি ব্ল্যাকওয়েলকে আমরা বিশ্বের অন্যতম সেরা ধনবতী মহিলা বলতে পারি। তিনি হলেন অশেষ ঐশ্বর্যের অধিকারিণী, অনন্ত ক্ষমতার কেন্দ্র। তার পিতা ছিলেন এক বিশিষ্ট হিরক ব্যবসায়ী, জীবন কাটিয়েছেন উত্তেজনা আর অহঙ্কারের মধ্যে।
এই বিশিষ্ট ভদ্রমহিলার নব্বইতম জন্মদিন, সুপ্রীম কোর্টের মাননীয় প্রধান বিচারপতির কাছ থেকে এসেছে অভিনন্দন পত্র, হোয়াইট হাউস থেকে কাঙ্ক্ষিত টেলিগ্রাম ।
কেটি ছাড়া সেই জন্মদিনের অনুষ্ঠানে অনেকগুলি ভৌতিক অগচ্ছায়াকে দেখা গেছে। যে সমস্ত বন্ধরা আসতে পারেননি, তাঁদের প্রেতাত্মা, অনুপস্থিত শক্ররাও, এইসব ভৌতিক অপচ্ছায়ারা কেটিকে বারেবারে ব্লাকমেল করার চেষ্টা করেছে। আর এভাবেই উদ্ভাসিত হয়েছে এক ঘটনা পরম্পরা । যার পরতে পরতে শঙ্কা শিহরণের হাতছানি । আছে দুরন্ত
লোভ, দুর্দান্ত ভালোবাসা এবং নিঃসীম আত্মবলিদানের শ্বাসরোধকারী ঘটনাপ্রবাহ্..
উপস্থাপনা
কেটি
১৮৮২ বিশাল বলরুমে পরিচিত ভূতেদের আনাগোনা । সকলে এসেছে, তার জন্মদিনের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে । কেটি ব্ল্যাকওয়েল অবাক বিস্ময়ে তাদের দিকে তাকালেন। কী অবাক, রক্তমাংসের অতিথিদের পাশাপাশি তাদের অবস্থান। মনের মধ্যে স্বপ্নিল ছায়া ছায়া কল্পনা। এইসব ভৌতিক অপচ্ছায়ারা বিরাট হলঘরে নৃত্যরত। তাদের ইভনিং গাউন স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। এই সিডারহিল হাউসে অন্তত একশোজন অতিথির সমাবেশ হয়েছে। এক সুন্দর সাজানো পরিবেশ। মাইনের ডাকহারবারে । কিন্তু কেটির মনে সুখ নেই।
রোগা চেহারার এক বৃদ্ধা ভদ্রমহিলা, মুখের ওপর এমন কিছু নেই, যা তাকে স্মরণযোগ্য করে রাখবে। চেহারাটা সুগঠিত। চোখের তারায় উষাকালীন শুভ্রতা, চিবুকটা ধারালো। অবয়বের মধ্যে স্কটিশ এবং ওলন্দাজ সংমিশ্রণ আছে। হ্যাঁ, তার আর একটা আকর্ষণ হল, ঈষৎ কালো পোশাক । সেখানে হাতির দাঁতের দ্যুতি। হাতের চামড়ায় টান ধরেছে।
বয়সের অভিশাপ আর কী!
মনে হয় না, আমি আজ নব্বইতে পদার্পণ করলাম, কেটি মনে মনে ভাবলেন। কীভাবে বছরগুলো হারিয়ে গেল? তিনি নৃত্যরত ভূতেদের দিকে তাকালেন। হ্যা, একসময় তারা ছিল, আমার জীবনের সাথে অঙ্গাঙ্গীভাবে। আজ আর তারা কেউ বেঁচে নেই। উনি বান্দাকে দেখতে পেলেন, হ্যাঁ, বান্দার উজ্জ্বল কালো মুখ খুশিতে আলোকিত। ডেভিডকেও দেখা গেল, প্রিয় ডেভিড, সেই সুন্দর সুবেশ সুস্নাত পুরুষ চরিত্রটি, মনে পড়ে গেল, প্রথম দেখার মুহূর্ত । যখন তিনি ডেভিডকে উন্মাদনীর মতো ভালবেসেছিলেন। ডেভিড তার দিকে তাকিয়ে হাসছে । কেটির মনে হল, এসো, এসো আমার ডার্লিং। ভাবলেন, আহা, ডেভিড যদি এখন বেঁচে থাকত? তাহলে নাতির ছেলের সঙ্গে দেখা হত হয়তো।
কেটির চোখ সর্বত্র ঘুরে বেড়াচ্ছে। শেষ পর্যন্ত তাকে দেখতে পেলেন। আট বছরের এক সুন্দর বালক, ভারি সুন্দর পোশাক পরেছে। কালো ভেলভেটের জ্যাকেট, পছন্দসই ট্রাউজার । রবার্টকে দেখে মনে হয়, সে বুঝি ঠাকুরদার বাবার আদলটা পেয়েছে। জেমি ম্যাকগ্রেগর মার্বেল ফায়ার প্লেসের পাশে, পেইন্টিং-এ এখন যার উপস্থিতি ।
রবার্ট ফিরে তাকাল । কেটি মাথা নীচু করে হাতের ইঙ্গিত করলেন। হ্যাঁ, কুড়ি ক্যারেটের হিরের আংটি ঝলসে উঠল। কত বছর হয়ে গেল। ভাবতে অবাক লাগে বৈকি।
মুহূর্তের জন্য কেটি ভাবলেন। আমি একটা মৃত অন্ধ অতীত হয়ে গেছি। ও হল ভবিষ্যৎ । আমার নাতির ছেলে । তার হাতেই একদিন এই বিরাট সাম্রাজ্যের দায়িত্ব অর্পণ করা হবে। তিনি এগিয়ে গেলেন।
ছেলেটি বলল-দিদা, আজ তোমার জন্মদিন, তাই না?
-হ্যাঁ, ধন্যবাদ রবার্ট।
-ভারী সুন্দর অকেস্ট্রা।
কেটি তাকালেন, এক মুহূর্তের নীরবতা । তারপর বললেন তোমার ভালো লেগেছে, দাদুভাই?
-দিদা, সত্যি কথা বলব? তোমাকে দেখে নব্বই বলে মনেই হয় না।
সম্পূর্ণ বইটি পড়তে চাইলে নিচের ডাউনলোড বাটনে ক্লিক করে বইটি ডাউনলোড করে নিন।