একটু চোখ বুলিয়ে নিন
সিন্দুক
মিসির আলির ঘর অন্ধকার । তিনি অন্ধকার ঘরে চেয়ারে পা তুলে বসে আছেন।
চেয়ারে পা তুলে বসে থাকার বিষয়টা আমার অনুমান । অদ্ধকীরের কারণে তাকে
দেখতে পাচ্ছি না। তবে পা তুলে জবুথবু ভঙ্গিতে বসে থাকা তার অভ্যাস |
আমি বললাম, ঘরে মোমবাতি নাই?
মিসির আলি বললেন, টেবিলে মোমবাতি বসানো আছে ? এতক্ষণ জ্বলছিল ।
আপনি ঘরে ঢোকার কিছুক্ষণ আগে বাতাসে নিভে গেছে।
আমি বললাম, মোমবাতি জ্ালাব? লা-কি অন্ধকারে বসে থাকবেন?
মিসির আলি বললেন, থাকি কিছুক্ষণ অন্ধকারে । আধারের রূপ দেখি ।
বিশেষ কিছু নিয়ে চিন্তা করছিলেন?
মিসির আলি বললেন, আপনার কি ধারণা সারাক্ষণ আদি কিছু-না-কিছু লিয়ে
চিন্তা করি? চিন্তার দোকান খুলে বসেছি? পকেটে দেয়াশলাই থাকলে মোমবাতি
জ্বালান। একা একা অন্ধকারে বসে খাক্ষা খায় | পু জন অঙ্ককারে থাকা যায় না।
কেন?
দু’জন হলেই মুখ দেখতে ইচ্ছা করে।
আমি মোম জ্বালালাম । আমার অনুমান ঠিক হয়নি ৷ মিসির আলি পা নামিয়ে
বসে আছেন । তাকে সুখি সুখি লাগছে । বিষেবাড়ির খাবার খাওয়ার পর পান মুখে
দিয়ে একটা স্গারেট ধরালে চেহারায় যে সুখি সুখি ভাব আসে নে রকম ।
মিসির আলি বললেন, বিশেষ কোনো কাজে এসেছেন না-কি গল্পগুজব?
গল্ুগুজব ।
মিসির আলি বললেন, আপনি কি একটা ব্যাপার লক্ষ করেছেন? আমরা
সবস্ময় বলি গল্পগুজব ! শুধু গল্প বলি না। তার অর্থ হচ্ছে আমাদের গল্পে গুজব”
একটা বিশেষ স্থান দখল করে আছে। আমাদের গল্পের একটা অংশ থাকবে
লেখক সম্পর্কে
বাংলাদেশের লেখালেখির ভুবনে প্রবাদ পুরুষ। গত ত্রিশ বছর ধরেই তাঁর তুঙ্গস্পর্শী
জনপ্রিয়তা । এক সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন শাস্ত্রের অধ্যাপক ছিলেন । অধ্যাপনা
ছেড়ে হঠাৎ করেই চলচ্চিত্র নির্মাণ শুরু করেন। আগুনের পরশমণি, শ্রাবণ মেঘের
‘দিন, দুই দুয়ারী, চন্দ্রকথা, শ্যামল ছায়া, আমার আছে জল, … ছবি বানানো চলছেই।
ফাঁকে ফাঁকে টিভির জন্য নাটক বানানো। মানুষ হিসেবে তাঁকে তাঁরই সৃষ্ট চরিত্র হিমু এবং মিসির আলি মতোই রহস্যময় বলে
মনে হস্ত । তার বেশিরভাগ সময় কাটে নিজের তৈরি নন্দনকানন “নুহাশ পল্লী’তে ।