একটু চোখ বুলিয়ে নিন
আবুল কাশেম জোয়ার্দার কোনো পশু-পাখি পছন্দ করেন না। ছোটবেলায়
তার বয়স যখন তিন, তখন একা ছাদে বসে পাউরুটি খাঁচিছলেন । কথা নাই-
বার্তা নাই দুটো দাড়কাক তার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ল। একটা বসল তার
মাথায়, অন্যটা পাউরুটি নিয়ে উড়ে গেল। কাক শিশুদের ভয় পায় না।
জোয়ার্দার চিৎকার করে অজ্ঞান হওয়ার আগ পর্যন্ত দাড়কাকটা গন্তীর ভঙ্গিতে
মাথায় বসেই রইল । দুণ্টা ঠোকর দিয়ে মাথা জখম করে দিলো । পাখি
অপছন্দ করার জোয়ার্দার সাহেবের এটিই হলো শানে নজুল।
পশ্ অপছন্দ করার পেছনে কুচকুচে কালো রঙের একটা পাগলা কুকুরের
ভূমিকা আছে। জোয়ার্দার তখন ক্লাস ফোরে পড়েন । স্কুল ছুটি হয়েছে, সবাই
বাড়ি ফিরছে, হঠাৎ পাগলা কুকুরটা ছুটে এসে তাকে কামড়ে ধরল । সব ছাত্র
পৌড়ে পালাল, শুধু একজন তাকে রক্ষা করার জন্য ছুটে এল। তার নাম
জামাল, সে পড়ে ক্লাস ফাইভে । জামাল তার বই নিয়ে কুকুরের মাথায় বাড়ি
দিতে লাগল । কুকুরটা তাকেও কামড়াল। জোয়ার্দার সাহেবের বাবা ছেলের
নাভিতে সাতটা ইনজেকশন দেওয়ার ব্যবস্থা করলেন।
জামালের কৃষক বাবার সেই সমার্থ্য ছিল না। তিনি ছেলের জন্য চাল
পড়ার ব্যবস্থা করলেন । নবীনগরের পীর সাহেবের পানি পড়া খাওয়ালেন।
পাগলা কুকুরের কিছু লোম তাবিজে ভরে জামালের গলায় ঝুলিয়ে দেওয়া
হলো । চাল পড়া, পানি পুড়া এবং তাবিজে কাজ হলো না । জামাল যারা গেল
জলাতঙ্কে । শেষ পর্যায়ে তাকে দড়ি দিয়ে বেধে রাখা হয়েছিল সে কুকুরের
মতোই দ্বড়ঘড় শব্দ করতে করতে মুখ দিয়ে ফেনা তুলতে তুলতে মারা
গেল।
জামালের মৃত্যুতে জোয়ার্দার সাহেবের মানসিক কিছু সমস্যা মনে হয়
হয়েছে । বাড়িতে যখন কেউ থাকে না, তখন তিনি জামীলকে চোখের সামনে
লেখক সম্পর্কে
বাংলাদেশের লেখালেখির ভুবনে প্রবাদ পুরুষ। গত ত্রিশ বছর ধরেই তাঁর তুঙ্গস্পর্শী
জনপ্রিয়তা । এক সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন শাস্ত্রের অধ্যাপক ছিলেন । অধ্যাপনা
ছেড়ে হঠাৎ করেই চলচ্চিত্র নির্মাণ শুরু করেন। আগুনের পরশমণি, শ্রাবণ মেঘের
‘দিন, দুই দুয়ারী, চন্দ্রকথা, শ্যামল ছায়া, আমার আছে জল, … ছবি বানানো চলছেই।
ফাঁকে ফাঁকে টিভির জন্য নাটক বানানো। মানুষ হিসেবে তাঁকে তাঁরই সৃষ্ট চরিত্র হিমু এবং মিসির আলি মতোই রহস্যময় বলে
মনে হস্ত । তার বেশিরভাগ সময় কাটে নিজের তৈরি নন্দনকানন “নুহাশ পল্লী’তে ।