Putul by Humayun Ahmed

পুতুল – হুমায়ূন আহমেদ (Putul by Humayun Ahmed)

একটু চোখ বুলিয়ে নিন

পুতুলের ঘর থেকে তাদের বাগনটা দেখা যায়। এত সুন্দর লাগে
তার । শুধু তাকিয়ে থাকতে ইচ্ছে করে । তাদের বাগান অন্যদের বাগা-
নের মতো নয় । তিনটা বিশাল বড়ো বড়ো গাছ, একটা রেনটি, গাছ । এত
বড়ো যে মনে হয় এই গাছের পাতাগুলে। আকাশে লেগে গেছে । আর দুটো
হচ্ছে কদম ফুলের গাছ । কদম ফুলের গছ দু’টি পাশাপাশি যেন দুই
জমজ বোন, এক জন অন্য জনের গায়ে হেলান দিয়ে আছে । বর্ষাকালে
গাছ দুর্টিতে কি অন্তত ফুল ফোটে । সেনার বলের মতো ফুল।

পৃতুল্ের মা জেসমিন কদম ফুলের গাছ দু’টি একেবারেই সহা করতে
পারেন না। কারণ হচ্ছে শুয়োপোকা ॥ কদম গাছে খুব শুঁয়োপোকা হয় ।
আর অুঁয়োপোকা দেখলেই জেসমিনের বমি পেয়ে যায় । তিনি প্রতি শীত-
কালে একবার করে বলেন-__গ1ছগুলো কাটিয়ে ফেলা দরকার শেষ পর্যন্ত
কেন জানি কাটা হয় না। দেখতে দেখতে বর্ষ এসে যায় । অদ্ভুত কদম
ফুলগুলো ফোটে | কী যে ভাল লাগে পৃতুলের ।

এখন শীতকাল। কদিন আগে ঠিক করা হয়েছে বড়ো বড়ো গাছগুলো
সব কেটে ফেলা হবে ॥ জেসমিন বজলু মিগ্লা বলে একটি লোককে ঠিক
করেছেন । লোকটির মুখে বসন্তের দাগ । তার একটা চোখও নস্ট ॥

লেখক সম্পর্কে

কিংবদন্তি কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ। স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশে ‘নন্দিত নরকে’র মাধ্যমে আত্নপ্রকাশ। এই উপন্যাসে নিম্নমধ্যবিত্ত এক পরিবারের যাপিত জীবনের আনন্দ-বেদনা, স্বপ্ন, মর্মান্তিক ট্রাজেডি মূর্ত হয়ে উঠেছে। নগর জীবনের পটভূমিতেই তার অধিকাংশ উপন্যাস রচিত। তবে গ্রামীণ জীবনের চিত্রও গভীর মমতায় তুলে ধরেছেন এই কথাশিল্পী। এর উজ্জ্বল উদাহারণ ‘অচিনপুর’, ‘ফেরা’, মধ্যাহ্ন। মুক্তিযুদ্ধ বারবার তার লেখায় ফুঠে উটেছে। এই কথার উজ্জ্বল স্বাক্ষর ‘জোছনা ও জননীর গল্প’, ‘১৯৭১’, ‘আগুনের পরশমণি’, ‘শ্যামল ছায়া’, ‘নির্বাসন’ প্রভৃতি উপন্যাস। ‘গৌরিপুর জংশন’, ‘যখন গিয়েছে ডুবে পঞ্চমীর চাঁদ’, চাঁদের আলোয় কয়েকজন যুবক’ -এ জীবন ও চারপাশকে দেখার ভিন্ন দৃষ্টিকোণ মূর্ত হয়ে উঠেছে। ‘বাদশা নামদার’, ‘মাতাল হাওয়া’য় অতীত ও নিকট-অতীতের রাজরাজরা ও সাধারণ মানুষের গল্প ইতিহাস থেকে উঠে এসেছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top