দি নেকেড ফেইস - সিডনি শেলডন (The Naked Face By Sidney Sheldon)

দি নেকেড ফেইস – সিডনি শেলডন (The Naked Face By Sidney Sheldon)

একটু চোখ বুলিয়ে নিন

অফুরান উৎসব

০১,

সকাল এগারোটা বাজতে দশ।

সারা আকাশ জুড়ে হঠাৎ শুরু হয়ে গেছে অফুরান উৎসব। ধবধবে সাদা তুষারের কণা বৃষ্টি হয়ে ঝরে পড়ছে সমস্ত শহরের ওপর। রাস্তাগুলো ইতিমধ্যেই বরফ ঢাকা, নতুন করে এই তুষার-বৃষ্টি সে সহ্য করতে পারবে কি? ডিসেম্বরের হু-হু শীতল ঠান্ডা হাওয়া। বড়োদিন উপলক্ষে যারা কেনাকাটা করতে এসেছে, তারা ছুটতে লাগল।

লেক্সিংটন এভিনিউ। হলুদ বর্ষাতি গায়ে লম্বা রোগা লোকটা নিজস্ব ছন্দে হেটে চলেছে। জোরেই হাঁটছিল সে। ঠান্ডা এড়িয়ে এখুনি তাকে ঘরে নিশ্চিত নিরাপত্তায় ফিরতে হবে। লোকটা আনমনা, অনেকের সঙ্গে ধাক্কা লাগছে তার, কোনোদিকে ভ্রুক্ষেপ নেই। তার মনে একটাই চিন্তা-মেরির কাছে কত তাড়াতাড়ি খবরটা পৌঁছে দেবে সে।

অতীত মুছে গেছে। এতদিন রুদ্ধকারার অন্তরালে দিন কেটেছে একাকীত্তের যন্ত্রণায়। এখন সে পাখির মতো মুক্ত। নতুন করে জীবনটাকে আবার গড়ে তুলবে।

চোখ বন্ধ করে একবার ভাবরার চেষ্টা করল। এই খবরটা শুনে মেরির মুখের অবস্থা কী রকম হবে? উনষাট নম্বর স্ট্রিটের মুখে নিষেধের লাল আলোটা জ্বলে উঠল। অধৈর্য পথচারীদের পাশাপাশি থমকে থেমে দাঁড়াতে বাধ্য হল সে। একটু দূরে সান্তাক্লজের মূর্তি। ভাগ্যদেবতার উদ্দেশ্যে কিছু পয়সা প্রণামী দিতে হবে। অভ্যাসবশত ডান হাতটা
প্যান্টের পকেটে ঢুকিয়ে দিল সে। আর তখনই তার পিঠে কে যেন চাপড় মারল । চমকে উঠল সে। ভাবল, হয়তো কোনো মাতালের কাণ্ড ।

কিন্তু কে মারল? বিস্ময়ের সঙ্গে ও লক্ষ্য করল, ওর হাঁটু দুটো যেন ভেঙে পড়েছে। নিজের দেহটা পথের ওপর আছড়ে পড়ছে। আচমকা আঘাতটা লেগেছে । সমস্ত শরীরে সেটা ছড়িয়ে পড়ছে। মুখের পাশ দিয়ে হেটে যাওয়া জুতোর মিছিল দেখতে পাচ্ছিল সে। হিমঠান্ডা ফুটপাথের ওপর পড়ে থাকা শরীরটা ক্রমশ অবশ হয়ে আসছে। বুঝতে পারল সে, এই জায়গাটায় শুয়ে থাকা উচিত নয়। একটা আর্ত চিৎকার বের করার চেষ্টা করল। রক্তধারা মুখ থেকে বেরিয়ে এল। ধারাটা এগিয়ে গেল নর্দমার দিকে । যন্ত্রণাটা দুঃসহ। তবুও সে পরোয়া করল না। ওই শুভ সংবাদটার কথা আরও একবার মনে পড়ে গেল তার। এখন সে মুক্ত! মুক্তির খবর মেরির কানে পৌঁছে দিতে হবে । আকাশে চোখ ধাঁধানো সূর্য। চোখ দুটো বন্ধ করল সে। তুষারকণা আরও জোরে আক্রমণ করতে শুরু
করেছে তাকে । ভাগ্যিস একটু বাদে সে হারিয়ে গেল অবচেতনার অন্ধকারে, তা না হলে

০২.

অভ্যর্থনা কক্ষের দরজা খোলা । ক্যারল রবার্টস বসে আছে। দরজা বন্ধ করার শব্দ পেল সে। পায়ের আওয়াজও। উদ্দেশ্যটা কী? অনুমান করতে পারে সে। ওরা দুজন। চল্লিশ ছাপিয়ে গেছে একজনের বয়স, বিশাল চেহারা, লম্বায় ছু-ফুটের বেশি হবে। নিমেদ শরীর, ইস্পাতের মতো পেশী, মাথাটা প্রকাণ্ড। কৌতুকহীন একজোড়া নীল চোখ ।দ্বিতীয় লোকটার বয়স কম। মনে হয় ভোলামেলা প্রকৃতির। চোখদুটি ধুসর । চাউনিতে সতর্কতার ছাপ আছে। দুটো লোকের চেহারা একদম আলাদা । তবুও ক্যারলের মনে হল ওরা বোধহয় একই মায়ের পেটের দুই যমজ ছেলে।

ওরা দুজন পুলিশের লোক। ক্যারলের অনুভূতি এই খবরটা ইতিমধ্যেই পাঠিয়ে দিয়েছে মাথার ভেতর। এটাই ক্যারলের সবথেকে বড় গুণ, যে কোনো লোককে দেখে সে পেশা বুঝতে পারে।

ওরা টেবিলের দিকে এগিয়ে আসছে। ঘাম গড়াতে শুরু করেছে। কী হল? চিক? কোনো গন্ডগোল নাকি? কিন্তু ছমাসে ও পথ মাড়ায়নি, নিজের ফ্ল্যাটে নিয়ে এসেছিল । বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিল। সেদিন চিক সব কিছু ছেড়ে দেবার প্রতিশ্র্তি দেয়। তবে? স্যামির কিছু হয়েছে কি? তা কেমন করে সম্ভব? বিমানবাহিনীর কাজে স্যামি তো এখন
বিদেশে? দাদার যদি কিছু হয়ে থাকে? তাহলে পুলিশের লোক আসবে কেন?

নাঃ, ঠিক ব্যাপারটা বোঝা যাচ্ছে না। এখন ক্যারল হারলেমের বেশ্যা নয়। তার গায়ে কেউ ধাক্কা মারতে পারবে না। ওর পরিচয় আজ বিরাট। কিন্তু? আতঙ্ক ক্রমশ বাড়ছে কেন?

মনের মধ্যে এত তোলপাড়, মুখে সেটা ফুটিয়ে তোলেনি সে। নিখুঁত ছাঁদের পশমী পোশাক পরা এক বাদামী চামড়ার নিগ্রো তরুণী টেবিলের পেছনে বসে আছে। দেখে……

সম্পূর্ণ বইটি পড়তে চাইলে নিচের ডাউনলোড বাটনে ক্লিক করে বইটি ডাউনলোড করে নিন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top